নতুন বছর এসেই গেল। কিন্তু সেই বছরটায় ছুটি কবে কবে? শনি-রবিবারের ধাক্কায় কটা ছুটি নষ্ট হচ্ছে? কোন দিন ছুটি নিলে লম্বা অবকাশ?
যে যতই কাজ ভালবাসুন, ছুটির প্রতি ভালবাসা নেই এটা হতেই পারে না। আর বাঙালির তো কথাই নেই। বারো মাসে তেরো পার্বন নিয়ে রসে বসে ছুটি কাটাতে বাঙালি মাত্রই ভালবাসেন। আর সেই ছুটিটা যদি একটু লম্বা হয় তবে তো কথাই নেই। দুম করে কোথাও একটা চলে যাওয়া যায়। কিন্তু ইদানীং দুম করে কোথাও চলে যাওয়াটা সহজ নয়। চাইলেই মেলে না পছন্দের হোটেল, ট্রেনের টিকিট। তাই পরিকল্পনাটা হওয়া উচিত অনেক আগে।
তাই এখন থেকেই দেখে নিন সারা বছর কবে কবে ছুটি আছে। শনি-রবিবারের ধাক্কায় কটা ছুটি নষ্ট হচ্ছে? কোন দিন ছুটি নিলে লম্বা অবকাশ?
২০১৬ সালাটায় ছুটি একটু বেশিই ছিল। বছরের শেষদিনটাও ছুটি পড়েছে। কারণ, ৩১ ডিসেম্বর শনিবার। আর ঠিক তেমনভাবেই নতুন বছরের প্রথম দিনটাই অর্থাৎ বছরের প্রথম ছুটিটাই নষ্ট। ১ জানুয়ারি রবিবার।
এর পরে জানুয়ারি মাসে আর ছুটি নষ্ট নেই। ১২ জানুয়ারি বিবেকানন্দ জয়ন্তী মঙ্গলবার, নেতাজি জয়ন্তী ২৩ জানুয়ারি সোমবার আর ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবস মঙ্গলবার। অর্থাৎ ১১ জানুয়ারি সোমবার ছুটি নিতে পারলে টানা চারদিনের ছুটি কিন্তু ২৩ থেকে ২৬ ছুটি কাটানোটা একটু চাপের।
ফেব্রুয়ারিতে একটাই ছুটি, সরস্বতী পুজো। ১ ফেব্রুয়ারি বুধবার। ২০১৬ সালে শিবরাত্রিতে সরকারি ছুটি দিয়েছে রাজ্য। আগামী বছরে আর সেই ছুটিটি পাচ্ছেন না। কারণ, আগামী শিবরাত্রি ২৫ ফেব্রুয়ারি, শনিবার। মার্চেও একটিই ছুটি, দোলযাত্রা, ১২ তারিখ রবিবার। তবে রাজ্যে দোলের পর দিনেও ছুটি থাকে। সেই হিসেবে এই সময়েও তিন দিনের টানা ছুটি। শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসবে যাওয়ার প্ল্যান করতেই পারেন।
এপ্রিলে একটু দুঃখ রয়েছে। দু’টো ছুটি মিলে গিয়েছে। একটা ছুটি নষ্ট। ১৪ এপ্রিল, গুড ফ্রাইডের দিনেই আম্বেদকর জয়ন্তী। তার পরের দিন, শনিবার ১৫ এপ্রিল, পয়লা বৈশাখ। সেই দুঃখ মিটিয়ে দেবে মে দিবসের ছুটি। ১ মে পড়েছে সোমবার। মানে ঠিকঠাক প্ল্যান করলে তিন দিনের ছোট্ট একটা ট্রিপ হতেই পারে।
এর পরে একটা ছুটি নেওয়ার প্ল্যান করুন ৮ মে সোমবার। আগের দু’দিন শনি-রবি ছুটি তো রয়েছেই সেই সঙ্গে পরের দিন ৯ মে পঁচিশে বৈশাখ। ২৬ জুন সোমবারও তিন দিনের ছুটি নিয়ে আসছে ইদুলফিতর। এর পরেই পুজোর ছুটি। আর সেটা যদি মুখ্যমন্ত্রী একটু সদয় হন তবে টানা ১৬ দিনের। হিসেবটা দেখে নিন।
পঞ্জিকা অনুসারে, ২০১৭ সালে দুর্গাপুজো সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে। ১৯ সেপ্টেম্বর মহালয়া, ষষ্ঠী ২৬শে, মঙ্গলবার। রাজ্য সরকারের নিয়ম মতো সেই দিন থেকেই সরকারি অফিসে ছুটি পড়ার কথা। সেই ছুটি চলার কথা ৬ অক্টোবর, শুক্রবার অর্থাৎ লক্ষ্মীপুজোর পরের দিন পর্যন্ত। এর পরের দু’দিন শনি-রবিবার থাকায় ছুটি হয়ে যাচ্ছে টানা ১৩ দিন।
এবার মুখ্যমন্ত্রী পঞ্চমীর দিন পুজোর ছুটি শুরু করেছেন। ফলে সরকারি কর্মীদের বড় অংশের আশা, আগামী বছরও সেই ছুটি থাকবে। কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছুটি কমিয়ে দেওয়ার মানুষ নন। একবার যে ছুটি শুরু হয়েছে, সেটা আর বন্ধ হবে না। এমন জল্পনা চলছিলই, কিন্তু তা আরও পাকা হল কারণ, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন আগামীবার উৎসব শুরু হবে মহালয়া থেকেই। ২৫ সেপ্টেম্বর পঞ্চমীর দিন পড়েছে সোমবার। তার আগেও আবার রয়েছে শনি ও রবি। সরকারি অফিস বন্ধ। সেই হিসেবে ছুটি হবে ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত। টানা ১৬ দিন!
এটা অনেক লম্বা ছুটি। সুতরাং সেটা প্রাপ্য হলে তো কথাই নেই। তার জন্য যে দু’টি ছুটি নষ্ট হচ্ছে তার জন্য নিশ্চয়ই বাঙালি আক্ষেপ করবেন না। এই লম্বা ছুটির মধ্যেই চলে যাচ্ছে ১ অক্টোবর মহরম এবং ২ অক্টোবর গাঁধী জয়ন্তী। এর পরের ছুটি কালীপুজো ১৮ অক্টোবর বুধবার। ২০১৬ সালে কালীপুজোর বিসর্জনের জন্য ছুটি দেওয়া হয়েছে। সেই ছুটি পরের বছরেও দেওয়া হবে কিনা সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়। ২০ অক্টোবর শুক্রবার ভাইফোঁটা। তিন দিনের জন্য দিদি বা বোনের বাড়ি যাওয়াই যায়। আর কালীপুজোর পরের দু’দিন দেওয়ালি আর বিসর্জন উপলক্ষ্যে সরকার ছুটি ঘোষণা করলে তো কথাই নেই। ১৮ থেকে ২২ অক্টোবর টানা পাঁচ দিনের ছুটি-ছুটি-ছুটি।
৪ নভেম্বর গুরু নানকের জন্মদিন শনিবার কিন্তু ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন সোমবার। পিকনিক সারতে এবার একটু দূরের ডেস্টিনেশন বাছাই যায়।
No comments:
Post a Comment